মাহবুবে ইলাহী নিজামউদ্দিন আউলিয়া (আলাইহির রাহমাহ)


সুলতানুল মাশায়েখ মাহবুবে ইলাহী সৈয়্যদ খাজা নিজামউদ্দিন আউলিয়া (আলাইহির রাহমাহ) এর সংক্ষিপ্ত জীবণীঃ

উনার পূর্বপুরুষগণ বােখারার অধিবাসী ছিলেন। উনারা লাহাের হতে বাদায়ুন তাশরিফ নিয়ে আসেন। তিনি বাদায়ুনেই ৬৩৪ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন। সেখানেই শিক্ষাগ্রহণ করেন এবং ১৬ (ষােল) বছর বয়সে দিল্লী তাশরিফ নিয়ে আসেন। সেখানে তিনি তালকিন ও শিক্ষাদানের মধ্যে ব্যস্ত থাকতেন।

অতঃপর তিনি পাক-পাটান শরীফ (বর্তমানে পাকিস্তানে অবস্থিত) তাশরিফ নিয়ে আসেন এবং হযরত খাজা ফরিদউদ্দীন গঞ্জেশকর (আলাইহির রাহমাহ) এর নিকট বায়াত গ্রহণ করেন।

মারেফাত ও তাছাউফের সমস্ত ধাপ পরিপূর্ণ করার পর বাবা গঞ্জেশকর (আলাইহির রাহমাহ) বলেন, হে নিজাম! যাও এবং ভারতবর্ষ নিয়ে নাও। আমি তােমাকে আল্লাহর নিকট সমর্পন করলাম এবং এই রাজ্যকে তােমার হাতে দিয়ে দিলাম।

মাহবুবে ইলাহী (আলাইহির রাহমাহ) এর সত্তা এমন পবিত্র সত্তা যা চিশতিয়া সিলসিলাকে চিরস্থায়ী জীবন দান করেন। উনি এবং উনার সম্মানিত খলিফাগনই দুনিয়ার পূর্ব হতে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে হেদায়াত ও দ্বীনের প্রচারের মাধ্যমে খাজা গরীবে নেওয়াজ (অালাইহির রাহমাহ ) এর মিশনকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছান।
তার প্রায় ৬০০ এর বেশি খলিফা (খলিফা হচ্ছে একজন শিষ্য যাকে বায়াত গ্রহণ করার অনুমতি দেয়া হয় এবং স্বীয় মুর্শিদ বা পীরের বংশানুক্রমকে বিস্তার করার দায়িত্ব দেয়া হয়) আছে যারা বিশ্বময় তার আধ্যাত্বিক সাজরাকে বজায় রেখেছেন। তাদের মধ্যে বিখ্যাত শিষ্যগণ হল:
১। হযরত নাসিরুদ্দির চিরাগ দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলায়হি

২। হযরত আমির খুসরু রহমাতুল্লাহি আলায়হি
তিনি ছিলেন তার পীরও মূর্শিদের সবচেয়ে প্রিয় শিষ্য। তিনি তার মূর্শিদের এতটাই প্রিয় ছিলেন যে একদা নিজামুদ্দিন আউলিয়া বলেন, "যদি শরিয়ত আমাকে অনুমতি দিত তাহলে আমি খুসরুকে আমার সাথে একই কবরে সমাহিত করতে বলতাম।" তিনি আরো বলেন, কেউ যদি আমার রওজা (সমাধিস্থল) জিয়ারত করতে আসে; তাহলে সে যেন প্রথমে আমির খুসরুর রওজা আগে জিয়ারত করে তারপর তার রওজা। পীরের পরলোক গমনের কয়েক মাস পর তিনিও পরলোক গমন করেন। তাকে তার পীরের পায়ের কাছে সমাধিস্থ করা হয়। তার মাজার দিল্লী নয়াদিল্লীর নিজামুদ্দিন দরগাহে।

৩।হযরত আখিঁ সিরাজ আয়নায়ে হিন্দ রহমাতুল্লাহি আলায়হি
৪। হযরত বোরহানুদ্দিন গরীব রহমাতুল্লাহি আলায়হি
৫। হযরত জালালুদ্দিন ভান্ডারী রহমাতুল্লাহি আলায়হি
৬। সৈয়দ মাহমুদ কাশকিনাকার রহমাতুল্লাহি আলায়হি
৭। হযরত আযান ফকির রহমাতুল্লাহি আলায়হি

তিনি ৭২৫ হিজরী দিল্লীতে ইন্তেকাল করেন। আজ নয়াদিল্লীর চমৎকার এলাকাটি “ বাস্তিয়ে হযরত নিজামুদ্দীন" নামে পরিচিত। যেখানে উনার পবিত্র মাযার শরীফ অবস্থিত সে স্থানটি সমগ্র সৃষ্টি জগতের জিয়ারতের কেন্দ্রস্থল হয়ে রয়েছে। উনার উরস মােবারক প্রতি বছর রবিউস ছানি মাসের ১৭, ১৮, ১৯ ও ২০ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়।

No comments

Thanks for comment

Powered by Blogger.